গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধা সাদুল্লাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সংস্থা ‘গ্রাম উন্নয়ন ও দুঃস্থ সেবা কেন্দ্র’ (গুডসেক)। এটিতে এক সময় শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছিলো। এ সময়ে দুঃস্থ পরিবারের হাজারো মানুষ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছিলেন। এরই মধ্যে সেই প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়েছে কতিপয় স্বার্থন্বেশী ব্যক্তি। এর ফলে অচলাবস্থার দিকে এ সংস্থাটি। এটি পূণরায় সচল করে জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।
এ বিষয়ে সোমবার (১১ নভেম্বর) সরেজমিনে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বড় জামালপুর গ্রাামস্থ গুডসেক অফিস এলাকায় যাওয়া হয়। সম্প্রতি সংস্থার বিধি বহির্ভূতভাবে কমিটি গঠনের পায়তারা চলছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪নং জামালপুর ইউনিয়নের বড় জামালপুর গ্রামের মৃত হেসাব উদ্দিন মন্ডলের ছেলে এমএ কাইয়ুম মন্ডলের উদ্যোগে ‘কাঙ্গাল উন্নয়ন কেন্দ্র’ নামে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর গত ১৯৮৬ সালে বড় জামালপুর গ্রামস্থ প্রতিষ্ঠানটির নিববন্ধন নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালে এ প্রতিষ্ঠানে নাম পরিবর্তন করে ’গ্রাম উন্নয়ন ও দুঃস্থ সেবা কেন্দ্র’ (গুডসেক) নামকরণ করা হয়েছে। এর গঠনতন্ত্রে এমএ কাইয়ুম মন্ডল, আব্দুস সামাদ আকন্দ, মোস্তাফিজার রহমান মিঠু, জিল্লুর রহমান খন্দকার ও জরিনা বেগমসহ মোট পাঁচজনকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাখা হয়। এরপর থেকে সরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। এতে করে শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানসহ অসহায় দুঃস্থ হাজারো পরিবার প্রকল্প সমূহের সুবিধা পেয়েছেন।
এ ধারাবাহীকতার একপর্যায়ে ১৯৯৮ সালের দিকে কতিপয় স্বার্থন্বেশী ব্যক্তির অপতৎপরতায় গুডসেকের সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে এবং অগঠনতান্ত্রিকভাবে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করে সংস্থার নামীয় সম্পদের বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করেন। এ অবস্থায় গত বছরের ডিসেম্বরের দিকে সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরপর থেকে নতুন কমিটি গঠন কল্পে শুরু হয়েছে রশি টানাটানি। এ নিয়ে গত ১০ অক্টোবর সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুস সামাদ আকন্দ স্বাক্ষরিত একটি কমিটি সমাজসেবা অফিসে দাখিল করেছেন। অপরদিকে ২৭ অক্টোবর ছামছুল হাসান ছামছুল ও শহিদুল ইসলাম শিপন স্বাক্ষরিত আরেকটি কমিটি জমা করেছেন। আর এই কমিটির অনুমোদন নেওয়ার জন্য উভয় পক্ষই জোর চেষ্টায় রয়েছে বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম শিপন বলেন- সমাজসেবা অধিদফতরে আমরা একটি কমিটি দাখিল করেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা মামুন মন্ডল বলেন, প্রতিহিংসার কারণে গুডসেকের কার্যক্রমগুলো স্থবির হয়ে পড়ছে। এলাকার জনস্বার্থে সংস্থার গঠনতন্ত্র মোতাবেক নতুন করে কমিটি গঠন দরকার। সেইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি সচল করে প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টাও জরুরি।
গুডসেকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু বলেন, এর আগে কতিপয় স্বার্থন্বেশী ব্যক্তি নামসর্বস্ব কমিটি দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অর্থ-সম্পদ আতœসাত করেছে। এ থেকে পরিত্রাণে সংস্থার গঠনতন্ত্রের বিধি অনুযায়ী নতুন কমিটি অনুমোদনের জন্য সমাজসেবা অধিদফতরে নতুন কমিটি দাখিল করা হয়েছে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র রায় জানান- গুডসেকের পৃথক দুটি কমিটি দাখিল করেছে। একই প্রতিষ্ঠানে দুই কমিটি হতে পারে না। তাদের গঠনতন্ত্র মোতাবেক একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।