ইত্তিজা হাসান মনির,বরগুনা প্রতিনিধি:
গত ৩রা মে ইং তারিখ শুক্রবার নিজ ভাড়াটিয়া বাসায় সিলিংফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সৌদি প্রবাসী আব্দুল্লাহ আল মামুনের এসএসসি রেজাল্ট প্রার্থী ছেলে হাদিসুর রহমান সান (১৭)
হাদিসুর রহমান সান গৌরীচন্না নওয়াব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২৪ ব্যাচে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে রেজাল্টের অপেক্ষায় ছিল তার এ আত্মহত্যা নিয়ে পরিবারের মধ্যে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সান এর মায়ের অভিযোগ প্রেমিকার সাথে দ্বন্দ্বে আত্মহত্যা করেছে তার ছেলে। অপর দিকে সান এর পিতা তার আগের স্ত্রী সহ আরো চারজনকে আসামী করে হত্যার মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় আসামীরা হলেন নিহত হাদিসুরের সৎ পিতা মো. জামাল হোসেন(৪২), হাদিসুর এর মা মোসাঃ আরজু আক্তার(৩৫), হাদিসুর এর খালা মোসাঃ মোর্শেদা বেগম (৪০) এবং ৪ নম্বর আসামী হাদিসুর এর প্রেমিকা মোসাঃ জান্নাতি (১৮), এছাড়াও আরো ২/৩ জনকে অজ্ঞাত করা হয়েছে।
মামলার বিবরনীতে বলা হয়, মৃত হাদীসুরের পিতা এবং মাতার সাথে ১০ বছর পূর্বে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়, বিচ্ছেদের পর মৃত হাদীসুর রহমান তার পিতার সাথেই থাকতেন। বিচ্ছেদের এক বছর পরে ১ ও ২ নং আসামীদের মধ্যে বিবাহ হয়। গত দুই বছর পূর্বে মৃত্যু হাদীসুর রহমান তার মায়ের কাছে আসেন, তিনি মায়ের কাছে থাকলেও তার সম্পূর্ণ খরচ বহন করেন তার বাবা আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাদিসুর রহমান তার মায়ের সাথে থাকায় বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি ১ নং আসামি অর্থাৎ হাদিসুরের সৎ বাবা, বিভিন্ন সময় ১নং আসামী মৃত্যু হাদিসুর রহমানকে মানসিক যন্ত্রণা দিতো। উক্ত বিষয়ে মৃত হাদিসুর রহমান তার পিতাকে প্রায়ই ফোনে বলতো। এগুলো শুনে ৩ নং সাক্ষী হাদিসুর এর বাবা আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ছেলেকে নিজের কাছে নিতে চাইলে ২ নং আসামী অর্থাৎ হাদিসুরের মা বলতো তুই তোর পিতার কাছে গেলে আমি আত্মহত্যা করবো না হয় তোকে নিয়ে শেষ হয়ে যাব। উক্ত কারণে হাদিসুর রহমান তার বাবার কাছে যেত না। ৪ নং আসামী ভিকটিম কে ফোনে তার পিতা-মাতা সম্পর্কে খারাপ কথা বলে এবং বলে দুনিয়া থেকে চলে যা। ১ নং আসামি ৪ নং আসামীকে বিভিন্নভাবে উস্কানি দিত যাতে ভিকটিমকে মানসিকভাবে শেষ করে আত্মহত্যা করতে উদ্বুদ্ধ করে।
অতঃপর ঘটনার পূর্বে অর্থাৎ ২,৫,২৪ ইং তারিখ অনুমান রাত ৯:৩০ ঘটিকার সময় ১ও২ নং আসামি মৃত্যু হাদিসুর রহমানকে বিভিন্ন ধরনের বকাবকি করেন, এবং ভিকটিম হাদিসুর রহমানকে বলেন যে তোর জন্য আমার সংসারে যত জ্বালা তুই মরতে পারো না, না হয় তোর বাপের কাছে চলে যা। ১ নং ও ৩ নং আসামি ভিকটিমকে খারাপ ভাষায় গালি দেয় এবং আত্মহত্যা প্ররোচনা দেয় এবং উক্ত সময় সাক্ষী উক্ত ঘটনা ও ২ নং সাক্ষীর বাসার ছাদে বসে শুনতে পায়, ৩ নং আসামি ও ভিকটিম কে বিভিন্ন ধরনের নোংরা কথা বলে যাতে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।
অতঃপর ঘটনার সময় অর্থাৎ বিগত ৩,৫,২০২৪ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার অনুমান রাত ১:৩০ টা থেকে সকাল ১১:৩০ এর মধ্যে ১ নং আসামির ভাড়া বাসার মধ্যে ১নং আসামির বাসায় দ্বিতীয় তলার উত্তর পাশের কক্ষের মধ্যে ৫ নং সাক্ষী তার বাসার ছাদ থেকে অনুমান সকাল ১১:৩০ মিনিটের সময় মৃত হাদীসুর রহমানের দেহ ঝুলতে দেখে ৯৯৯ এ কল দেয় এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২ নং আসামিকে বাসায় পায় এবং রুমের মধ্যে থেকে হাদিসুরের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। তৎক্ষনাত বাদীকে ৬ নং সাক্ষী ফোন দিলে বাদী ঘটনাস্থলে এসে থানায় গিয়ে জানতে পারে লাশ ডোম ঘরে। অতঃপর ডোম ঘরে গিয়ে তিনি হাদিসুরের লাশ শনাক্ত করেন। থানায় বাদী আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে চাইলে থানা কর্তৃপক্ষ কোর্টে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দেয়।
সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ছেলে আত্মহত্যায় প্রোরচনাকারীদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবি করেছেন মৃত্যু হাদিসুর রহমান সান এর পিতা আব্দুল্লাহ আল মামুন।