এম জাফরান হারুন, পটুয়াখালী::
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে মোঃ আব্বাস মোল্লা নামে এক ব্যবসায়ীকে দোষী প্রমানিত না করেই পরিকল্পিত ভাবে রুবেল খাঁ গং কর্তৃক বেধড়ক মারধর করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আহত ভুক্তভোগী সহ এলাকাবাসী স্থানীয় চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হামলাকারীদের বিচার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার (২রা জুন-২০২৪ ইং) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চন্দ্রদ্বীপ খেয়াঘাটে। আহত মোঃ আব্বাস মোল্লা (৩৫), চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের চর মিয়াজান গ্রামের বাসিন্দা মৃত মোঃ সোনা মোল্লার ছেলে। মারধরের শিকার আহত মোঃ আব্বাস মোল্লা বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, রুবেল খাঁ নামে এক লোকের চন্দ্রদ্বীপ খেয়াঘাট থেকে আজ থেকে দুই আড়াই মাস আগে দুটি ছাগল চুরি হয়। পরে ঠিক দুই আড়াই মাস পর কে যেন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রুবেল খাঁকে জানায় যে আব্বাস মোল্লা সেই দুটি ছাগল চুরি করে তার স্টাফদের নিয়ে জবাই করে মাংস খেয়ে ফেলেছে। তাঁরই জের ধরে আব্বাস মোল্লা কে খবর দিয়ে এনে রুবেল খাঁ গংরা আব্বাস মোল্লা বেধড়ক মারধর করা হয়।
সরেজমিনে আহত মোঃ আব্বাস মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, তরমুজ শিজনে আমার স্টাফদের সাথে কাজ করাকে কেন্দ্র করে আমার ঝগড়া হয়। এতে স্টাফরা রাগ করে তাদের বাড়িতে তারা চলে যায়। এবং রুবেল খাঁ আমার তরমুজ তার গাড়িতে আনা নেওয়া করবে তা তাকে না দেওয়ায় সে আমার ওপর ক্ষোভ হয়ে থাকে। আমার স্টাফরা চলে যাওয়ার পরে শুনি রুবেল খাঁর দুটি ছাগল পান না। কিন্তু আড়াই মাসের বেশি হয়েছে এমন সময় রোববার বিকেলে হঠাৎ রুবেল খাঁ আমাকে ফোন দিয়ে চন্দ্রদ্বীপ খেয়াঘাটে আসতে বলে। আমিও চলে আসি। এমন সময় কোনও কথা নেই বলা নেই কোনও প্রমাণাদী নেই বা দোষী প্রমানিত না করেই রুবেল খাঁ, আনোয়ার খাঁ, বাবুল খাঁ, আলামিন, রাকিব ও সাইফুলরা সংঘবদ্ধ হয়ে আমাকে লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত বেধড়ক মারধর করে। আমার সর্ব শরীরে লাঠি ও কিল-ঘুষির আঘাতে রক্তাক্ত নীলাফুলা জখম করে আহত করে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি জেনে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এবং গত মঙ্গলবার (৪ঠা জুন) শালিসির তারিখ করে যান। তা এখন পর্যন্ত কোনও শালিসি হয়নি। আমাকে ছাগল চুরি প্রমানিত না করেই কেন পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে মারধর করে আহত করেছে তাঁই তাদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি। আর আমার অবস্থা তেমন একটা ভালো না। আমার শরীরে ব্যাপক সমস্যা হয়েছে। আমার যদি কিছু হয় তার দায় সব ওই হামলাকারীদের নিতে হবে।
সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান, আব্বাস মোল্লা একজন তরমুজ ব্যবসায়ী। আজ পর্যন্ত দেখি নাই বা শুনি নাই যে আব্বাস মোল্লা কোনও প্রকার কোনও অন্যায় অপরাধের সাথে জরিত। তাকে দোষী প্রমানিত না করেই এমন বেধড়ক মারধর করে আহত করা মোটেও ঠিক হয়নি। এটা নিশ্চিত পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে রুবেল খাঁ গংরা এমনটা করেছে। যা ঘটনাস্থলে ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মোঃ কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
কামাল মেম্বারের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, মারধর করেছে এটা সত্য। তবে আমি অনেক পরে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় আব্বাস মোল্লাকে রক্ষা করেছি।
এব্যাপারে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে হামলাকারীদের মধ্যে আনোয়ার খাঁ বলেন, আব্বাস মোল্লার স্টাফদের কাছে জানতে পারি যে আমার ভাই রুবেল খাঁর দুটি ছাগল চুরি করে তার স্টাফদের নিয়ে খেয়ে ফেলেছে। তাই তাকে বেশি একটা মারধর করা হয়নি।
স্থানীয় চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লা বলেন, আমি ঘটনা ঘটার বিষয় জেনে দ্রুত এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এবং আব্বাস মোল্লা কে দ্রুত চিকিৎসার নেওয়ার পরামর্শ সহ গত মঙ্গলবার শালিসি করার তারিখ দেই। এর বিভিন্ন ভাবে ব্যস্ত থাকায় আর বসা হয়নি। আর উভয় পক্ষের কেউই এখনো আমার কাছে আসেনি। তবে দোষী প্রমানিত না করেই মারধর করা ঠিক হয়নি।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, এরকমের কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে খোঁজ নিয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।