এম জাফরান হারুন::
পটুয়াখালীর বাউফলে ইতি দাস (২০) নামে এক কলেজ ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত ইতি উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দাশপাড়া গ্রামের নিরঞ্জন দাসের মেয়ে। সে বরিশাল বিএম কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলো। সোমবার (৩রা ফেব্রুয়ারী) রাত ৯টার দিকে উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের দাশপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবার জানায়, সোমবার বেলা ১২টার দিকে ইতি দাস সরস্বতী পূজায় অঞ্জলীতে অংশ নিতে বাউফল সরকারি কলেজে যায়। সেখান থেকে অনিক নামের তার এক বন্ধুর সাথে পৌর শহরের পাবলিক মাঠ এলাকায় ঢাকাই ফাস্টফুড নামের একটি রেস্টুরেন্টে যায়। সেখানে একদল বখাটে তরুণ ইতি দাস ও তার বন্ধুকে জিম্মি করে লাঞ্চিত করে। ওই সময় হোটেলে বাউফল থানার এক পুলিশ অফিসারও ছিলেন বলে জানা গেছে। এক পর্যায়ে ওই বখাটে তরুণরা ইতি ও তার বন্ধুকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় ওই পুলিশ অফিসারও সাথে ছিলেন বলে একটি সূত্র জানান। সূত্র আরও জানায়, ইতি বা তার বন্ধুকে অফিসিয়ালি থানায় না নিয়ে থানা কমপ্লেক্সের মধ্যে একটি টোলঘরে অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়েছিল।
এরপর বিকেল ৪টার দিকে ইতির বাবা নিরঞ্জন দাসকে একটি ফোনের মাধ্যমে ইতিকে থানা থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হলে বাবা নিরঞ্জন দাস মেয়েকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, থানায় নেয়া এবং বখাটেদের লাঞ্চনার শিকার হওয়ার ঘটনায় সৃষ্ট আবেগে রাত ৯টার দিকে নিজ ঘরে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
নিহত ইতির বাবা নিরঞ্জন দাস জানান, একটি নম্বর থেকে ফোন করে তার মেয়েকে থানায় আটকে রাখার কথা জানানো হয়। পরে তিনি থানায় গিয়ে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যান। এতে লজ্জায় ইতি নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দেয়। ঝুলন্ত অবস্থায় ইতিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দিবেন না বলে জানান ইতির বাবা।
এবিষয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. গোলাম মুস্তাহিদ জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ইতির মৃত্যু হয়েছে। নিহতের গলায় ফাঁসের চিহৃ দেখা দেখা গেছে।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে ইতির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।